সাবি্বর নেওয়াজ/এবিএম ফজলুর রহমান, ঈশ্বরদী ঘুরে এসে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। এলাকার মানুষ তাকে 'ডিলু এমপি' নামে ডাকেন। এ ডিলু এমপি এখন 'ঈশ্বরদীর রাজা'। পদ্মা অধ্যুষিত এ এলাকায় তার একাধিপত্য। ডিলুর ক্ষমতা ব্যবহার করে তার স্ত্রী, কন্যা, জামাতা, ভগি্নপতিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও এলাকায় দাপট দেখাচ্ছেন। এখানে চলছে দখল আর লুটপাট। মূল টার্গেটে প্রতিপক্ষ রাজনীতিকরা তো আছেনই, নিজ দলের নেতাদের সম্পত্তিও গিলছে এমপি ডিলুর আত্মীয়স্বজনরা। সাংসদের জামাতা এলাকায় গড়ে তুলেছেন সন্ত্রাসী বাহিনী। এ বাহিনীর ভয়ে সাধারণ মানুষ তো বটেই, স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরাও কথা বলতে পারছেন না। এলাকার জলমহাল, বালুমহাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কুক্ষিগত করে রেখেছেন সাংসদ পরিবারের সদস্যরা। ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিস-উন নবী বিশ্বাস সমকালকে বলেন, 'দল ক্ষমতায় থাকলে অনেকেই নাম ভাঙিয়ে লুটপাটে নামে। আখের গুছিয়ে নেয়। ঈশ্বরদীতেও এসব চলছে।' এসব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ ডিলু। ঈশ্বরদীর নিজ বাড়িতে বসে সমকালকে তিনি বলেন, 'আমি একজন জনপ্রিয় এমপি। আগের চেয়ে আমার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। গত নির্বাচনে ৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতেছি।' এমপি বলেন, 'আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল নানা কুৎসা রটাচ্ছে।' আগামীতে ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অভিযোগে প্রকাশ ঈশ্বরদী আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ৫ কোটি টাকার মূল্যের জমি দখল করে নিয়েছেন এমপির স্ত্রী কামরুন্নাহার ও নিকটাত্মীয়রা। এছাড়া উপজেলা বিএনপি সভাপতিরও ১০ কোটি টাকার সম্পত্তি জবরদখল করেছেন সাংসদের স্বজনেরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলি চালানোর প্রধান আসামি কুখ্যাত খুনি ও ৬ হত্যা মামলার আসামি এক বিএনপি নেতাকে বালুমহাল বরাদ্দ দেওয়ার জন্য ডিও লেটার ইস্যু করেছেন সাংসদ। সাংসদের দুই ছেলে রানা ও রাসেলের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। টিআর, কাবিখা, কাবিটা দেখভাল করেন সাংসদের এক মেয়ে। এলাকার সাধারণ মানুষ বলেন, স্থানীয় বিএনপির দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে পরপর তিনবার এমপি হওয়ার সুবাদে বিত্তশালী হয়ে উঠেছে এমপি ডিলুর পরিবার। নিজ দল আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কেবল গত আড়াই বছরেই প্রায় শত কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করেছেন এমপির স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে। ঈশ্বরদী শহরের আলীবর্দি সড়কে সম্প্রতি দেড় বিঘা জমির ওপর দুই কোটি টাকা ব্যয়ে সাংসদ বানিয়েছেন প্রাসাদোপম একটি বাড়ি। সরেজমিন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, ঈশ্বরদীতে ডিলুর একাধিপত্যের কারণে এখানকার আওয়ামী লীগে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং প্রকট আকার নিয়েছে। ভয়ে কোনো নেতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহসও পান না। এমপি ডিলুর মতের বাইরে দলের নেতাকর্মীরা কথা বললে তার জামাই সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ মিন্টু ও যুবলীগ সভাপতি আবদুস সালামের ইশারায় চলা ছাত্রলীগ ক্যাডার ও সন্ত্রাসী জুবায়ের বাহিনীর আক্রমণের শিকার হতে হয়। সরকারদলীয় এমপি হওয়ায় ঈশ্বরদীতে শামসুর রহমান শরীফের নামে বেপরোয়াভাবে চলছে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখল ও টেন্ডারবাণিজ্য। পৌরসভা, উপজেলা, পাকশী রেল, এলজিইডিসহ ঠিকাদারি কাজের নিয়ন্ত্রণ করে মিন্টু-সালাম-জুবায়ের বাহিনী। ঈশ্বরদীতে এমপি ডিলুর ইশারায় চলা এ 'ত্রি-রত্ন' এখন ঈশ্বরদীবাসীর কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। উপজেলা খাদ্য অফিস, পিআইও অফিস, হাট, ঘাট, বালুমহাল ইজারা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তিসহ উপজেলা পরিষদের সব অফিস-আদালতের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান বিশ্বাস জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক হলেও এসব স্থানে তার কোনো কর্তৃত্ব রাখতে দেননি সাংসদের লোকজন। জমি দখল : অভিযোগে প্রকাশ ঈশ্বরদী থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ফকির নূরুল ইসলামের বাবার নামের ৩ একর ৩৮ শতাংশ জমি এমপি ডিলুর স্ত্রী কামরুন্নাহার এবং ভাতিজারা জালিয়াতির মাধ্যমে জাল দলিল তৈরি করে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন। শহরের অরণখোলা মৌজায় পৃথক কয়েকটি দাগে এসব জমির বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা। নূরুল ইসলাম ফকির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ অন্যায়ের বিচার দাবি করেছেন। ফকির নূরুল ইসলাম বলেন, 'পাবনা জেলা আওয়ামী লীগ গঠনের পর থেকেই কমিটিতে ছিলাম। ডিলু এমপি হওয়ার পর কোনো পদেই রাখা হয়নি।' ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সভাপতি আকবর আলী বিশ্বাসের ২৭১ শতাংশ জমি জাল দলিলের মাধ্যমে লিখে নিয়েছেন এমপির স্ত্রী। আকবর আলী সমকালকে বলেন, 'সিএস খতিয়ানে ওই জমি তার বাবা এবং বড় ভাইয়ের নামে ছিল। এসএ খতিয়ানে তা খাস খতিয়ানে চলে যায়। পরে রেকর্ড বাতিলের জন্য আদালতে মামলা করা হলে জজকোর্ট, হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে আমি রায় পাই। অথচ এমপির নির্দেশে তার স্ত্রী, ছেলে, যুবলীগ সভাপতি আবদুস সালাম খানসহ একটি বিশাল ক্যাডার বাহিনী শহরের পোস্ট অফিস মোড় এলাকায় প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করে রেখেছে।' সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে ৪০টি দোকান ও ৭টি বসতঘর তোলা হয়েছে। স্থানীয় দোকানিরা জানান, এমপির স্ত্রীকে তারা দোকানের ভাড়া দেন। মাসে প্রায় ৭০ হাজার টাকা ভাড়া ওঠে। জমি দখলের ব্যাপারে বলতে গিয়ে ফকির নূরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি নন বলে দাবি করেন সাংসদ ডিলু। তিনি বলেন, 'তার অভিযোগ সত্য নয়।' জমির মালিকানা দাবি করা আপনার স্ত্রী নামের দলিলটি কি তবে জাল?_ জানতে চাইলে সাংসদ বলেন, 'কোনো জাল দলিলের সঙ্গে আমার স্ত্রীর সম্পৃক্ততা নেই।' আকবর আলী বিশ্বাসের জমি দখল প্রসঙ্গে শামসুর রহমান শরীফ বলেন, 'আকবর আলী বিশ্বাস বিএনপি নেতা। তিনি আমার বিরুদ্ধে বলবেনই।' শহরের পোস্ট অফিস মোড়ের জমি সম্পর্কে সাংসদ বলেন, 'নজির আহমদ নামে এক ব্যক্তির ছেলেদের কাছ থেকে আমার স্ত্রী ওই জমি কিনেছেন।' শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও শ্যেন দৃষ্টি : পাবনা-৪ আসনের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এমপি ডিলুর পরিবারের নেক নজর রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের নামে চলছে ঘুষবাণিজ্য। প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কথা বলে এমপির নামে শিক্ষকদের কাছ থেকে ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। একজন অধ্যক্ষ বলেন, 'আড়াই বছরে এ এলাকার হাইস্কুল ও কলেজে তিন লাখ টাকার নিচে কোনো শিক্ষক নিয়োগ হয়নি।' তিনি আরও বলেন, 'আইন অনুসারে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হওয়ার বিধান থাকলেও এমপি ডিলু প্রায় ১১টি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। তিনি কোনো আইনের তোয়াক্কা করেন না।' এ ব্যাপারে এমপি বলেন, 'বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। সে সব সমাধানের জন্য সভাপতির দায়িত্ব নিই। সমস্যা কেটে গেলে সরকারি কর্মকর্তাদের হাতে ছেড়ে দিই। জনপ্রতিনিধি হিসেবে এটা করতে হয়।' আইন অনুযায়ী চারটি কলেজের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন বলে এমপি দাবি করেন। শিক্ষক নিয়োগে ও এমপিওভুক্তির ঘুষ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এগুলো সম্পর্কে আমার জানা নেই।' জামাই কাহিনী :স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছে এমপির মেয়ে জামাই আবুল কালাম আজাদ মিন্টু শ্বশুরের ক্ষমতার প্রভাবে এলাকায় সন্ত্রাসী বাহিনী গড়েছেন। জেলা যুবলীগ সভাপতি আবদুস সালাম খান ও পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের বিশ্বাস এ বাহিনীর দুই সেকেন্ড ইন কমান্ড। পৌরসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন এমন ধারণায় গত বছর ১৫ আগস্ট বাহিনীর সদস্যরা পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাচ্চুর শেরশাহ সড়কের বাসভবনে হামলা করে। সেখানে তাকে না পেয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। বাচ্চু সমকালকে বলেন, 'ভয়ে মামলা পর্যন্ত করতে পারিনি। দলের সবাই জানে কার নির্দেশে কীভাবে এ হামলা হয়েছে।' ঈশ্বরদীর চালকল মালিকদের কয়েকজন বলেন, 'জামাই-শ্বশুরের কারণে ২০০৯ সালের জুন মাসে সাধারণ মিলাররা সরকারের কাছে খাদ্যশস্য বিক্রি করতে পারেনি।' ঈশ্বরদী খাদ্য গুদামে সরকারি খাদ্যশস্য সংগ্রহকালে গত বছর তালিকাভুক্ত মিলারদের বাদ দিয়ে 'বিশেষ সুবিধার বিনিময়ে' ৭২ জনের কাছ থেকে চাল কিনতে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য করা হয়। ঈশ্বরদী প্রেস ক্লাবের কয়েকজন সদস্য সমকালকে বলেন, খাদ্য সংগ্রহ নিয়ে এমপি ও মিন্টুর এ বাণিজ্যের কথা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশ হলে মিন্টুর নেতৃত্বে তার বাহিনীর সন্ত্রাসীরা ওইদিন গভীর রাতে একজন সাংবাদিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে। তারা ওই সাংবাদিক পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এছাড়া অপর একজন সাংবাদিককে ঈশ্বরদী বাজারের মনির প্লাজায় ডেকে নিয়ে মিন্টু নিজেই তাকে লাঞ্ছিত করে। ঈশ্বরদী উপজেলার পাশ দিয়ে প্রমত্তা পদ্মা বয়ে যাওয়ায় এ উপজেলায় অনেক বালুমহাল রয়েছে। ঈশ্বরদী যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলেন, বালুমহালগুলোর সবই নামে-বেনামে মিন্টুর দখলে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় তিনটি বালুমহাল_ পাকশী, সাঁড়া ও রূপপুর থেকে মিন্টুর প্রতিদিনের আয় লাখ টাকা। এমপির মৌখিক অনুমোদনেই চলছে অবাধ বালু উত্তোলন। ঈশ্বরদী পৌর ও উপজেলার ঠিকাদারি কাজের সব দরপত্র এককভাবে মিন্টুর নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ ঠিকাদারদের কাজ পাওয়ার সুযোগ কম। হঠাৎ কেউ কোনো কাজ পেলে তাকে কাজ ফিরিয়ে দিতে বাধ্য করে মিন্টু বাহিনী। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে মিন্টু উত্তেজিত হয়ে সমকালকে বলেন, 'সংবাদপত্রে কোনো বক্তব্য দেব না। আমার কোনো বক্তব্য নেই।' অন্যদিকে, মিন্টুর অপকর্মের দায় নিতে অস্বীকৃতি জানান সাংসদ শামসুর রহমান শরীফ। তিনি সমকালকে বলেন, 'মিন্টু আমার জামাতা। তার অপকর্মের কোনো তথ্য পেলে আপনারা লিখতে পারেন। তাতে আমাকে জড়ানো ঠিক হবে না। আমি জামাই, ভাই-ভাতিজাকে প্রশ্রয় দেওয়ার লোক নই।' পৌর নির্বাচনে নিজের মেয়ে জামাইয়ের হারের বিষয়ে সাংসদ বলেন, আমার জামাতা নির্বাচনে হারেনি। হেরেছে 'মিন্টু'।' নির্দিষ্টি চালকল মালিকদের কাছ থেকে চাল কিনতে বাধ্য করার বিষয়ে তিনি বলেন, 'অনেক সময় চালকল মালিকরা সিন্ডিকেট করে সরকারকে দাম বাড়াতে বাধ্য করে। তখন আমার লোকদের কম দামে চাল দিতে বলি।' তিনি আরও বলেন, 'কোনো চালকল মালিক কোরআন শরিফে হাত রেখে বলতে পারবেন না তারা আমাকে ঘুষ দিয়েছেন।' মেয়ের কবজায় টিআর, কাবিখা, কাবিটা : টিআর, কাবিখা ও কাবিটা এবং ভিজিডি, ভিজিএফের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেন এমপির মেয়ে। তাকে সহায়তা করেন এমপিপত্নী। পছন্দের লোকদের মাঝেই ভিজিডি, ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হয়। প্রকল্পও নেওয়া হয় এ দু'জনের ইচ্ছামতো। এ নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মাঝে চাপা ক্ষোভ রয়েছে। জানা গেছে, এমপির মেয়ে অন্তত ৪০টি সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। নামসর্বস্ব বহু প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অনুদান বরাদ্দের নামে চলছে হরিলুট। এমপি বলেন, 'বরাদ্দের অর্থ কেউ লুটে নিচ্ছে এমন অভিযোগ পাইনি।' এদিকে রেলওয়ের নির্মাণ, সংস্কার, পরিবহনসহ সব ধরনের ঠিকাদারি দরপত্র পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করেন এমপির ভগি্নপতি গোলাম মোস্তফা চান্না মণ্ডল। তার সঙ্গে রয়েছেন পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি হবিবুল ইসলাম হব্বুল এবং সহ-সভাপতি এনাম বিশ্বাস। এ বিষয়ে সাংসদ বলেন, 'দলের সবার সব দায়ভার আমি নেব না।' আপনার নাম ভাঙিয়েই তো এগুলো হচ্ছে_ এমন কথা বলা হলে সাংসদ বলেন, 'কেউ আমার নাম ভাঙালে কর্মকর্তারা শুনবেন কেন?' এলাকাবাসী জানান, কিছুদিন আগে ঘুষের বিনিময়ে ঈশ্বরদী পৌরসভায় সাংসদ ডিলু ১৮ জনকে নিয়োগ দেন। পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নিয়োগ বাতিলের আদেশ দেয়। এরপর নিয়োগপ্রাপ্তরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। ঈশ্বরদীর সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে এ সাংসদের বিরুদ্ধে। এসব বিষয়ে সাংসদ সমকালকে বলেন, 'নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে আমি জানি না।' স্বাধীনভাবে সাংবাদিকদের কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'এটা কী সম্ভব? ঈশ্বরদী থেকে ২৪টি পত্রিকা বের হয়। এর ২৩টিই আমার সুপারিশে ডিক্লারেশন পেয়েছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাসদের পত্রিকা রয়েছে।' তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, 'আমি কয় জনের মুখ বন্ধ করব?' জামায়াত নেতার পত্রিকা ডিক্লারেশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে এমপি বলেন, 'তখন জানতাম না।'
0 Comments
|
পৃষ্ঠা নির্বাচন করুন
|